এলাকাবাসী জানান, দক্ষিণ কুমিল্লার সবচেয়ে বড় পশুর হাট উপজেলার মিরশ্বানী বাজার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিক্রেতারা এখানে গরু-ছাগল নিয়ে আসেন। এখানে সপ্তাহের প্রতি বুধবার বসে পশুর হাট। এ হাটের বিভিন্ন প্রতারণা সম্পর্কে প্রশাসনকে অবহিত করা হলে বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন ছদ্মবেশে ক্রেতা সেজে বাজারে হাজির হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিছু অসাধু ছাগল ব্যবসায়ী প্রতি বুধবার মিরশ্বানী বাজারের ঠিক পেছনের একটি নির্জন স্থানে ছাগলের মুখে পাইপ দিয়ে বিশেষ কায়দায় পানি ঢুকিয়ে ওজন বাড়ায়। এতে ছাগলগুলোর পেটে অতিরিক্ত পানি জমে ওজন বেড়ে যায়। ক্রেতারা পশু পরিপুষ্ট ও সুস্থ মনে করলেও কয়েক দিন পর সেগুলো মারা যায়। তাতে ক্রেতারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এভাবে জোরপূর্বক পানি ঢুকিয়ে ছাগলের ওপর অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। যা প্রাণী সংরক্ষণ আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘মিরশ্বানী বাজারে এ ধরনের অনিয়মের বিষয়ে অনেক দিন ধরে অভিযোগ পাচ্ছিলাম। আজ নিজেই ক্রেতা সেজে বাজারে গিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িত ৯ জনকে হাতেনাতে আটক করি। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময় ৬৮টি ছোট-বড় খাসি জব্দ করা হয়। এর মধ্যে একটি খাসি মুখ ও মলদ্বার দিয়ে পানি বের হতে থাকা অবস্থায় তাৎক্ষণিক মারা যায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় বাকীগুলোকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পেয়ার আহমেদ নামের এক ব্যক্তির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।’
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। পরে আদালতের নির্দেশে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।