ঢাকার ধামরাইয়ে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা, শ্লীলতাহানি, টাকা ও স্বর্ণ লুট এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মনিরুজ্জামান মনিরসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এবিষয়ে ধামরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। এর আগে গেলো শনিবার ( ০৯ আগস্ট ) ধামরাই উপজেলার
সোমভাগ ইউনিয়নের বাদেগাওয়াইল ঈদ গাহ মাঠের পশ্চিম পাশে ভুক্তভোগী নারীর নিজ বাসায় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন, সোমভাগ ইউনিয়নের চরডাউটিয়া এলাকার মো. মালেক মেম্বারের ছেলে মনিরুজ্জামান মনির, বাদেগাওয়াইল এলাকার নাসির উদ্দীনের ছেলে সিরাজ, একই এলাকার আজগর আলীর ছেলে মোশারফ, পাগলার ছেলে সজিবসহ অজ্ঞাত নামা আরে কয়েকজন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে আসামি সিরাজ ভুক্তভোগী কে কুপ্রস্তাব দেয়। ভুক্তভোগী তা প্রত্যাখ্যান ও সিরাজ কে অপমান করলে, সিরাজ ভুক্তভোগীকে টার্গেট করে স্থানীয় কিছু অসামাজিক লোক দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁদ পাতে। ভুক্তভোগী সকাল ৮:০০ থেকে রাত ১০:০০ টা পর্যন্ত অফিস করায়, তার ছেলে বাসায় একাই থাকে। এই সুযোগে সিরাজ ও মনিরুজ্জামান মনিরের নির্দেশে তাদের লোকজন ভুক্তভোগী ওই নারীর বেডরুম, ওয়াশরুম ও বারান্দায় গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে। কিছু দিন পর ভুক্তভোগী দুটি ক্যামেরা দেখতে পেয়ে ভেঙে ফেলে। কিন্তু একা থাকার কারণে এবং শত্রুতা এড়ানোর জন্য কাউকে কিছু বলে না।
আগস্টের ৭ তারিখে ভুক্তভোগীর বাসার আইপিএস নষ্ট হলে, তার অফিসের এক সহকর্মীকে বাসায় নিয়ে আসে। সে মেরামত শেষে চলে যাওয়ার সময় পিছন থেকে ভুক্তভোগী কে জড়িয়ে ধরে। পরে ভুক্তভোগী তাকে সড়িয়ে দেয়। এই দৃশ্যটি অভিযুক্তদের লুকানো ক্যামেরায় ধারণ হয়।
পরে তারা সেই ভিডিও সংগ্রহ করে এলাকাবাসীর সামনে ছড়িয়ে দেয়, সাংবাদিক দিয়ে ভুক্তভোগী কে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে এবং টাকা দাবি করে। এছাড়া তারা ভুক্তভোগী কে শারীরিকভাবে আঘাত করে। ভুক্তভোগী হৃদরোগী হওয়ায় পরদিন ভোর সকালে হাসপাতালে যায়। ভুক্তভোগীর অভিযোগ ওই রাতেই আমার বাসা থেকে ৫ লক্ষ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন চার্জার, ফ্রিজে রাখা মাংসসহ অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। আর এসবের নেতৃত্ব দেয় মনিরুজ্জামান মনির।
অভিযুক্ত মনিরসহ সবাই ভুক্তভোগীর কাছে টাকা দাবি করে এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। টাকা না দেওয়ায় আসামি সিরাজ ও তার স্ত্রী আমার কানের দুল, গলার চেইন ও রকেট খুলে নিয়ে যায়।
পরের দিন ভুক্তভোগী স্থানীয় ৪ জনকে নিয়ে (আবুবকর, রোমান, মাহমুদ, বোরহান) মনিরের কাছে যায় এবং ২০,০০০ টাকা দিয়ে কিছু গয়না ফেরত আনে, কিন্তু রকেট ও টাকা এখনো রয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী নারী জানান, আমার নিজের বাসায় কারোর সিসি ক্যামেরা লাগানোর রাইট নাই। তারা কেনো আমার বাসায় সিসি ক্যামেরা লাগালো। মনির আমার চুল ধরে মারাসহ শ্লীলতাহানি করে। তার নেতৃত্বেই সব কিছু হয়। আমার গা থেকে গয়না খুলে নিয়ে যায় তারা, টাকা নেয়। আবার ২০ হাজার টাকা দিলে আমার স্বর্ণের চেইন ফিরত দেয় মনিরসহ কয়েক জন। কিন্তু আরো গয়না আছে আমার যা দিচ্ছে না। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান মনির কে একাধিকবার ফোন দিলেও সে ফোন রিসিভ করে না। এক পর্যায়ে ফোন রিসিভ করলেও সাংবাদিক পরিচয় শুনে বলে মনির ভাই মোবাইল চার্জে রেখে বাহিরে গেছে। পরে ফোন দিয়েন।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”